নিজস্ব প্রতিনিধি, কুতুবদিয়া ::
লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বাল্যবিবাহ করাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে বড়ঘোপের কাজী মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে। ওই সব বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হিমসিম খাচ্ছেন খোদ থানা পুলিশ।
এলাকাবাসী জানান, লকডাউনে শুধু অমজাখালীতে ২০/২৫ টি বাল্যবিবাহ হয়েছে। মাইক বাজিয়ে কিংবা উৎসব মুখর পরিবেশে ধুমধাম করে বিবাহ অনুষ্টান করতে না পারলেও থেমে নেই বিবাহ বন্ধনের এই কাজ। লকডাউনের বাধ্যবাধকতায় আনুষ্টানিকতা গোপন থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চলছে এসব বাল্যবিবাহ। এ সুযোগ লুপে নিচ্ছে স্বয়ং নিকাহ রেজিষ্টার। অভিযোগ উঠেছে
বড়ঘোপের কাজী রুহুল মান্নান হেলালীর সহকারী মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে। বেশি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অবৈধভাবে ডুপ্লিকেট খাতায় কাবিন করান এই মোজাম্মেল। পরে বয়স পুর্ণ হলে আসল নিকাহ-রেজিঃ বইতে লিপিবদ্ধ করেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, কুতুবদিয়ার বড়ঘোপ ইউনিয়নের মগডেইল এলাকার জয়নাল আবেদিনের কন্যা কানিজ ফাতেমা জেকি (১৫) এর সাথে একই ইউনিয়নের মধ্যম অমজাখালী গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২৫) বিবাহ অনুষ্ঠানের কাবিননামা সম্পাদন করেন অভিযুক্ত কাজী মান্নানের সহকারী মোজাম্মেল। বিবাহ অনুষ্ঠানের দিন বুধবার (১০জুন) রাত ১০টায় খবর পেয়ে বরের বাড়িতে গিয়ে বাল্যবিবাহটি পন্ড করেন ওসি মোঃ দিদারুল ফেরদাউসের নির্দেশে এসআই মোস্তাক। পুলিশ ফোর্স যাচ্ছে খবর পেয়ে কনের আত্মীয় স্বজন কনে কে নিয়ে পুলিশের চোখ ফাঁঁকি দিয়ে কনের বাড়িতে চলে যায়। বরের বাড়ির বিবাহ অনুষ্টান থেকে অন্যান্য আত্মীয়রা পালিয়ে গেলেও পুলিশ বিবাহ অনুষ্টান থেকে বরের পিতাকে আটক করে কনের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখান থেকে রাত ১২ টার দিকে কনের পিতাকে আটক করে পুুুলিশ। পরে বর ও কনের দুই পিতা থেকে ১৮ বছরের আগে কনেকে বরের বাড়িতে নামাই না দিতে মুছলেখা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন বলে জানান এসআই মোস্তাক।
অভিযুক্ত বড়ঘোপ ইউনিয়ের দায়িত্ব পালনকারী কাজীর সহকারী মোজাম্মেল জানান, কাবিন করতে দুইপক্ষ আমার কাছে আসছিল। আমি কাগজপত্র দেখেছি। বয়স কম হওয়ায় বিয়েটি সম্পাদন করাইনি। কেননা, এটি আইন বিরোধী। কখনো বাল্যবিবাহ করতে কাউকে উৎসাহ দিইনি। টাকা নিয়ে বাল্যবিবাহ পড়ানোর কথা অস্বীকার করেন তিনি।
ওসি দিদারুল ফেরদাউস জানান, বর-কনে সহ তাদের অভিভাবককে ১৫জুন সকালে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় হাজির হতে বলা হয়। কাগজপত্রে বয়স কম হওয়ায় মুচলেকা আদায় করে প্রথম বারের মতো সতর্ক করে অভিভাবকের জিন্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বয়স পুর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কনেকে বিয়ের পিড়িতে না বসাতে অভিভাবকদের নিষেধ করা হয়েছে।
এদিকে, বাল্যবিবাহ পন্ড করার এক দিন পর ফের বরের বাড়িতে কনেকে নিয়ে যাওয়ায় ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। সেই সাথে বাল্যবিবাহ পড়ানো কাজী মোজাম্মেল ও আকদ পড়ানো মৌলবী মধ্যম অমজাখালী জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাহমুদুল হক সহ বাল্যবিবাহে জড়িত বর রফিকুল ইসলাম এবং দুই পরিবারের অভিভাবকদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী। নতুবা বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না বলে মত প্রকাশ করেন সচেতনমহল।
পাঠকের মতামত: